আশার আলো

পণবন্দী মুক্তির ব্যাপারে চুক্তির পর যুদ্ধবিরতি থেকে শান্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে

Published - November 23, 2023 09:23 am IST

পণবন্দী মুক্তি এবং প্যালেস্টিনিয়ান জেলবন্দীদের ফেরত পাঠানোর বিনিময়ে ইজরায়েল-হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। এর ফলে গাজা ভুখণ্ডে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে অবর্ণনীয় পরিবেশে বসবাস করা গাজার ২.৩ মিলিয়ন মানুষকে এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই স্বস্তি প্রদান করবে। কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী, হামাস পণবন্দী করে রাখা ৫০ জন নাগরিককে মুক্তি দেবে। অন্যদিকে ১৫০ জন প্যালেস্টিনিয়ান জেলবন্দীকে মুক্তি দেবে ইজরায়েল। উভয় পক্ষই চার দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি পালন করবে। ইজরায়েলের সরকার বলেছে যে, হামাস যদি আরও পণবন্দীদের মুক্তি দেয়, তাহলে যুদ্ধবিরতি পর্ব বর্ধিত করা হতে পারে। তাই আরও দীর্ঘসময় ধরে যুদ্ধবিরতির একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। হামাস গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইজরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ২৪০ জনকে পণবন্দী করে, হত্যা করে কমপক্ষে ১,২০০ জনকে। এরপর, ওই একই দিনে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইজরায়েল। তাদের বক্তব্য ছিল, হামাসকে খতম করা হবে, গাজা থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি চিরতরে মুছে ফেলা হবে এবং পণবন্দীদের মুক্ত করা হবে। গত ছয় সপ্তাহে গাজা ভুখণ্ডে তাণ্ডব চালিয়েছে ইজরায়েল। কমপক্ষে ১৩,০০০ প্যালেস্টিনিয়ানকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা এবং শিশু। তবে এর পাশাপাশি ইজরায়েল ঘুরপথে হামাসের সাথে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে, যাতে পণবন্দীদের মুক্ত করা যায়। এই প্রচেষ্টারই ফল হলো বর্তমানের চুক্তি।

তবে সেটাই পর্যাপ্ত নয়। গাজার যে সব লোকেরা অনবরত বোমা হামলার শিকার হয়েছেন, বাসস্থান হারিয়েছেন এবং খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের কাছে যেটা আরও বেশি প্রয়োজন তা হলো দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি। ইজরায়েল প্রথমে “সন্ত্রাসবাদী হামাসদের” সাথে কোনো ধরনের কথাবার্তা হয়েছে বলে স্বীকার করেনি এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে এই ইসলামিক জঙ্গী গোষ্ঠীকে খতম করা হবে। হামাস যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, তার জন্য ইজরায়েলের রাগ হওয়া খুব স্বাভাবিক। তবে ইজরায়েল নিজেদের পাল্টা হামলায় সামগ্রিকভাবে গোটা গোজা ভুখণ্ডের মানুষকেই সম্মিলিতভাবে শাস্তি দিয়েছে। ইজরায়েলের অনেক মন্ত্রী বিপজ্জনক এবং বিদ্বেষপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে পরমাণু আক্রমণের হুমকি, দক্ষিণ গাজায় মহামারিকে স্বাগত জানানো। তবে ছয় সপ্তাহ লড়াই করার পর দেখা যাচ্ছে যে, ইজরায়েল যে লক্ষ্য অর্জন করবে বলে সামরিক অভিযান শুরু করেছিল, তা থেকে এখন অনেক দূরে রয়েছে। তাই ইজরায়েলের সামরিক কৌশলের কার্যকারিতা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে। গাজার সবচেয়ে বড় মেডিকেল সেন্টার হিসাবে পরিচিত, আল-শিফা হাসপাতালে ইজরায়েল আক্রমণ চালায়। তাদের দাবি, ওই হাসপাতালের নিচে হামাস জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে। তারপর এক সপ্তাহেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে, তবুও এই দাবির সাপেক্ষে ইজরায়েল বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেনি। তবে, ইজরায়েল এবং হামাস চুক্তি করতে রাজি হওয়ার ফলে একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, উভয় পক্ষ রক্তক্ষয়ী লড়াই এবং একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারের রাস্তা থেকে কিছুটা সরে গিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণে রাজি। এই চুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য উভয় পক্ষের আরও সক্রিয় এবং যুদ্ধবিরতি চিরস্থায়ী করার জন্য আন্তরিক হওয়া উচিত। সব পণবন্দীকে মুক্ত করার, প্যালেস্টিনিয়দেরকে দীর্ঘমেয়াদী সুরাহা প্রদান করার এবং পশ্চিম এশিয়াতে উত্তেজক পরিস্থিতি কমানোর এটাই একমাত্র উপায়।

0 / 0
Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.