অঘোষিত জরুরি অবস্থা

ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য নিউজক্লিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ এবং গ্রেফতারির ঘটনা ঘটানো হয়েছে

October 05, 2023 10:43 am | Updated 10:44 am IST

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। সাংবাদিকদের চাঁচাছোলা লেখা দেখলে যে এই সরকারের অস্বস্তি হয়, তা আগেই দেখা গিয়েছে। তবে এসবের পরেও যেভাবে সংবাদ ওয়েবসাইট নিউজ ক্লিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলো, তা প্রতিহিংসামূলক এবং চূড়ান্ত হেনস্থার সমতুল। সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটটির মুখ্য সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং অন্য এক ব্যক্তিকে কুখ্যাত ‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট’ সহ অন্যান্য আইনের ধারায় কেন গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে, সে ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে এখনও কিছু বলা হয়নি। তবে যেটা জানা গিয়েছে, “চীনা যোগসাজশে এক সন্ত্রাসের মামলার” জন্য ওয়েবসাইটটির ওপর তদন্ত চালানো হচ্ছে। যদিও “সন্ত্রাস” বা চীনের সমর্থনের প্রচারের প্রমাণ হিসাবে কোনো আর্টিকেল বা কনটেন্ট দেখানো হয়নি। এছাড়া সংবাদ সংস্থাটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদেরকে ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্টের কোনো কপি দেওয়া হয়নি বা তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, সেটাও তাদেরকে বলা হয়নি। তবুও সংস্থাটির সাথে যুক্ত থাকা সাংবাদিক, কন্ট্রিবিউটর এবং কর্মীদের ওপর তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাদের অনেকের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে ওয়েবসাইটটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার ঘটনা নতুন নয়। ২০২১ সাল থেকেই সংস্থাটি এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট (ইডি) এবং ইনকাম ট্যাক্স বিভাগের কড়া নজরে ছিল। নানা ইলেক্ট্রনিক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হলেও সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। এদিকে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর দিল্লি হাইকোর্ট নিউজক্লিকের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুরকায়স্থকে গ্রেফতারির হাত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা প্রদান করেছে এবং সংস্থাটির বিরুদ্ধে ইডিকে দমনমূলক পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করেছে। এই একই বিষয়ে নিম্ন আদালতে ইনকাম ট্যাক্সের দাখিল করা একটি অভিযোগ আগেই খারিজ করা হয়েছিল।

এবার আপাতভাবে মনে করা হচ্ছে যে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনই নিউজক্লিকের বিরুদ্ধে এই সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মূল কারণ। ওই প্রতিবেদনে নিউজক্লিকের এক বিনিয়োগকারীর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। চীন সরকারের সাথে ওই বিনিয়োগেকারীর ঘনিষ্ঠতা আছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে কোন আর্টিকেলে ভারতের বিরুদ্ধে বেআইনি প্রচার চালানো হয়েছে, তা নির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। প্রসঙ্গত, প্রতিবেদনটির ভিত্তিতে সাইটের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে অসম্মানজনক এবং মিথ্যা তথ্যের প্রচার চালাতে শুরু করেন সরকারের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবারের পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে মিডিয়াকে কাঠগড়ার তুলতে এবং প্রতিষ্ঠান বিরোধী সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ত্রাস সৃষ্টি করতে। কোনো সরকারেরই উচিত নয় সাংবাদিকদের ফান্ডিংয়ের ব্যাপারে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে তাদেরকে টার্গেট করা এবং সংবিধানের প্রদান করা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। ১৯৭৫ সালে পুরকায়স্থ যখন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী-আন্দোলনরত কর্মী ছিলেন, তখনও তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে, কুখ্যাত অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা আইনের ধারায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তখন দেশে জরুরি অবস্থা চলছিল। আজ সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হলো বলেই মনে হচ্ছে। তবে এখন ঘোষতি জরুর অবস্থা নেই।

0 / 0
Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.