দ্রাবিড়া মুন্নেত্রা কাজহগম (ডিএমকে) পার্টির কর্মকর্তা কে. পোনমুড়ি দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে, তামিলনাড়ুর মন্ত্রীসভা থেকে নিজের স্থান হারিয়েছেন। তার দলই যখন রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে, সেক্ষেত্রে এটি একটি বিরল নিদর্শন। জনগণের সেবক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করা কোনো ব্যক্তিকে যখন আদালত শাস্তি প্রদান করে এবং তাকে নিজের পদ থেকে সরে যেতে হয়, সেটাকে অবশ্যই স্বাগত জানাতে হবে। পোনমুড়ির ক্ষেত্রে, তার মামলার ভবিষ্যৎ কী হয়, তা জানার জন্য সুপ্রিম কোর্টে তার সম্ভাব্য আপিলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, যেখানে জানা যাবে যে ট্রায়াল কোর্টে তাকে খালাস করার সিদ্ধান্ত অথবা মাদ্রাস হাই কোর্টে তা বাতিল করে দেওয়া, কোনটি বহাল রাখা হবে। তবে বর্তমানে, তাকে এবং তার স্ত্রীকে, হিসাব বহির্ভূত ১.৭২ কোটি টাকার সম্পদের মালিকানার জন্য শাস্তি, ৩০ দিনের জন্য সাসপেন্ড, তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২০০৬-২০১১ সময়কালে ডিএমকে মন্ত্রকে থাকার সময় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলা করা হয়েছিল। তদন্ত এবং শাস্তি, উভয়ই করা হয়েছে অল ইন্ডিয়া দ্রাবিড়া মুন্নেত্রা কাজহগমের আমলে। এছাড়া রেড স্যান্ড মাইনিংয়ের জন্য পোনিমুড়ি নিজের পুত্র এবং আত্মীয়দেরকে বেআইনি লাইসেন্স দিয়েছেন বলে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে, তার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট। অন্য একটি অর্থ তছরুপের মামলায় ভি. সেন্থিল বালাজি আগেই জেলে গিয়েছেন। এবার দ্বিতীয় মন্ত্রী হিসাবে পোনিমুড়িও নিজের পোর্টফোলিও হারালেন।
তাদের আপিলের একটি মূল দৃষ্টিভঙ্গি হতে চলেছে যে পোনিমুড়ি এবং তার স্ত্রী পি. বিশালক্ষ্মীকে একে অপরের থেকে স্বতন্ত্র মূল্যায়নকারী হিসাবে বিবেচনা করা হবে এবং তাদের নামে যে সম্পত্তি রয়েছে, তার প্রায় ৬৫%-এর জন্য তাদের সম্মিলিত রোজগার এবং খরচের যে হিসাব মিলছে না, তা দেখাতে ভিজিলেন্স তদন্তকারীরা তাদের রোজগার একত্রিত করার সময় ভুল করেছিলেন বলে ট্রায়াল কোর্টের বিচারকের নেওয়া সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আদালত সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা। ব্যবসা এবং কৃষিকাজ থেকে বিশালক্ষ্মীর নিজস্ব রোজগার আছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, বিচারপতি জি. জয়াচন্দ্রন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং অতিরিক্ত রোজগার দেখাতে, দেরিতে ফাইল করা ট্যাক্স রিটার্নের বিশদ স্বীকার করে নেওয়ায় তিনি ট্রায়াল কোর্টের বিচারকের সমালোচনাও করেছেন। বিচারপতির বক্তব্য, তার পরিচালনা করা ব্যবসার বিক্রি এবং মুনাফা সংক্রান্ত তথ্য ছাড়াই শুধুমাত্র রোজগারের ব্যাপারে দাবি সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করাই পর্যাপ্ত নয়। তিনি প্রসিকিউশনের তরফ থেকে বিশেষজ্ঞ সাক্ষীর মন্তব্যকেই সমর্থন করেছেন যে, কৃষিযোগ্য জমির ভিত্তিতে, কৃষিকাজ থেকে হওয়া তার রোজগার, তার রিটার্নে দাবি করা পরিমাণের চেয়ে অনেক কম। ডিএমকের জন্য, যখন তাদের ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারিরা দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক দিক থেকে একটা ধাক্কা। দল আশা করবে যে পোনিমুড়ি যেন তার যোগ্যতা ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে তার শাস্তির ওপর স্থগিতাদেশ পান। তবে দুর্নীতির মামলায় সাধারণত স্থগিতাদেশের নির্দেশ খুবই বিরল। ডিএমকে সরকারে দলের প্রবীণ নেতারা যেভাবে দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পড়ছেন, তাতে জনসাধারণের সামনে দলের ভাবমূর্তিতে নিশ্চিতভাবে প্রভাব ফেলবে।
COMMents
SHARE