বর্তমানের কিছু অপরাধ সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর জন্য তিনটি বিলের ব্যাপারে চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রায় প্রস্তুত করে ফেলেছে পার্লামেন্টের সংশ্লিষ্ট কমিটি। তবে বিরোধী শিবিরের সদস্যরা বলেছেন, এই বিলগুলো নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। তাই স্বরাষ্ট্র বিষয়ট পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটি খসড়া রিপোর্ট গ্রহণ করার কাজ স্থগিত করে দিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত ইন্ডিয়ান পিনাল কোডের জায়গা নিতে চলা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিজারের জায়গা নিতে চলা ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা সম্পর্কে কমপক্ষে তিনটি বিরোধীতা প্রকাশ করা নোটস রয়েছে। ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের পরিবর্তে চালু হতে চলা ভারতীয় সাক্ষ বিলের ব্যাপারে সর্বসম্মতি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। গত ২৪ আগস্ট থেকে বিশল আলোচনা শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্ক্রুটিনি কতটা পর্যাপ্ত, সে ব্যাপারে তাই এখনও কিছু প্রশ্ন হয়তো থেকে যায়। মূলত বর্তমানের আইনগুলো ঔপনিবেশিক আমলের হওয়াতে, এগুলোর ব্যাপারে একটি সামগ্রিক পরিবর্তন আনার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বিলগুলোর ব্যাপারে যে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনায় দেশজুড়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণ করার কথা। যেটা হওয়া উচিত, তা হলো দেশজুড়ে প্যানেলের উদ্যোগে সেশনের আয়োজন এবং এই আইনের বিধিগুলো নিয়ে প্রকৃতপক্ষে যারা কাজ করেন, সেই অধস্তন বিচারবিভাগের সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন সেকশনের বিশদ বিবরণের ব্যাপারে আইনজীবী ও সমাজকর্মীদের মতামত জেনে নেওয়া।
রিপোর্টটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য আরও সময়ের দাবি করা হয়েছে, তার কারণ এটি গ্রহণ করার মাত্র কয়েকদিন আগে খসড়াটি শুধুমাত্র ইংরেজিতে প্রচার করা হয়েছিল। সেশনের আগের দিন সন্ধ্যায় এটির হিন্দি সংস্করণ প্রস্তুত করা হয়। প্যানেলের পরবর্তী বৈঠক আগামী ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। খসড়া রিপোর্টটি বিশদে খতিয়ে দেখার জন্য প্যানেলের সদস্যদের আরও সময় দিতে বর্তমানের এই বিলম্বকে একটি বিরতি ছাড়া আর বেশি কিছু হিসাবে বিবেচনা করা অনুচিত হবে। বরং এই সুযোগটিকে কমিটিকে দেওয়া সময় তিন মাসের জন্য বাড়িয়ে দেওয়ার একটা সুযোগ হিসাবে দেখা প্রয়োজন। সরকারের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, তারা বিলগুলো পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন পেশ করার এবং উত্তীর্ণ করিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। তবে এতো তাড়াহুড়ো করার কোনো দরকার নেই। এটা বলা যেতে পারে, নতুন আইনগুলোর কিছু অংশ পুরানো বিধিগুলোকেই ঘুরিয়ে লেখা ছাড়া আর কিছু নয়। আইনসভায় এগুলো পেশ করার আগে স্ট্যান্ডিং কমিটির এটিতে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়াটাও পর্যাপ্ত হতে পারে। তবে এরকম অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে গভীর স্ক্রুটিনি দরকার: যেমন, অপব্যবহারের সম্ভাবনা, যদি থাকে, নতুন সংজ্ঞাতে এবং ‘ঘৃণাপূর্ণ ভষার’ মতো নতুন অপরাধগুলোর অন্তর্ভুক্তিকরণ কতটা যথাযথ এবং অপরাধমূলক ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত সংস্কারের জন্য আরও পরিধি রয়েছে কি না।