সমস্যার মধ্যে হতাশা

কৃষি ক্ষেত্রে সঙ্কটের ফলে দেশের অনেক যুবক বৈআইনি মাইগ্রেশনের পথ বেছে নিচ্ছেন

December 29, 2023 09:58 am | Updated 09:58 am IST

এমন একটা দুনিয়া যেখানে শ্রমিকদের নড়াচড়ার উপর নানা বিধি-নিষেধ থাকে, সেখানে এটা মোটেও অবাক করে দেওয়ার মতো বিষয় নয় যে অনেকেই নিজেদের দেশে সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার ফলে, বিশাল ঝুঁকি নিয়ে উন্নত বিশ্বের নানা দেশে সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করেন। এই প্রসঙ্গে, সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে আটক হওয়া ৩০৩ জন ভারতীয় নাগরিককে জোর করে দেশে ফেরানোর ঘটনার কথা বলা যায়। এমনকি, এটা মানব চোরাচালানের ঘটনাও হতে পারে। এদের মধ্যে প্রায় ২০ জন ফ্রান্সে আশ্রয় গ্রহণ করার আবেদন করেছিলেনষ বাকিরা মঙ্গলবার মুম্বইয়ে ফিরে এসেছেন। এটা প্রায় সবার জানা এবং একটা উদ্বেগজনক বিষয় যে, পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ বেশি ভারতীয় নাগরিক এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছেন। সংখ্যাটা প্রায় ১০০,০০০ হবে। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ডেটা পাওয়া গিয়েছে, যা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস এবং বর্ডার সুরক্ষা বিভাগ। আরও জানা গিয়েছে, এগুলোর মধ্যে অর্ধেকের বেশি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা হয়েছে কড়া পাহারা দেওয়া মেক্সিকো সীমান্তে। বাকি প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে কানাডার দিকে থাকা সীমান্ত অঞ্চলে। ভারতীয়রা কীভাবে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, কঠিন পথ পেরি, মেক্সিকো থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা করছেন তা ২০১৯ সালের জুন মাসে অ্যারিজোনা মরুভূমিতে পাঞ্জাবের ছয় বছর বয়সী এক মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির প্রায় নয় মাস আগে এই ঘটনাটি ঘটে, যে কারণে ট্রাম্প প্রশাসন খুব বিরল ক্ষেত্রে ব্যবহৃত, শুনানি ছাড়াই আশ্রয় খোঁজার জন্য আগত শরণার্থীকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে বর্ডার এজেন্সিকে ক্ষমতা প্রদান করা, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোডের ৪২ টাইটেল প্রয়োগ করেছিল। কোভিড-১৯ পর্ব কেটে যাওয়ার পর এবং বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর এই ধরনের মাইগ্রেশন প্রচেষ্টার সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপুল সংখ্যক ভারতীয় যেভাবে নিজেদের জীবনের তোয়াক্কা না করে অবৈধ শরণার্থী হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছে, তা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে তারা একপ্রকার নিরুপায় হয়ে এই কাজ করছেন বা তাদেরকে ভুলপথে চালিত করার ফলে তারা এই কাজ করছেন।

বর্তমান ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট থেকেও জানা গিয়েছে যে এই ধরনের অভিশপ্ত যাত্রায় বিমানে ওঠা অধিকাংশ যাত্রীই পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং গুজরাটের বাসিন্দা। এদের মনে অনেক নাবালক আবার একাই যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এই ধরনের মাইগ্রেশনের প্রাথমিক কারণ হিসাবে শিখ সম্প্রদায়ের কিছু লোকজন ধর্মীয় উৎপীড়নের দিকে আঙুল তুলেছেন। অন্যদিকে বাকিরা দোষারোপ করেছেন কৃষি ক্ষেত্রে তৈরি হওয়া সঙ্কটকে। কারণ যাই হোক না কেন, ভারত সরকারকে এবার এই ধরনের মানব চোরাচালান চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। এই অসাধু চক্রগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে, বিশেষত পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলোর গ্রামীণ এলাকার বিপুল লোকজনকে ফাঁদে জড়িয়ে দেয়। কৃষিক্ষেত্রে ক্রমশ নিম্নগামী রোজগার এবং কৃষি জমি থেকে পর্যাপ্ত আয় না হওয়ার ফলে এই ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য লেবার মার্কেটে থাকা দালালদের উপর কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে কাজ শুরু করতে হবে।

0 / 0
Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.