পরিবর্তনের হাওয়া বইছে

মায়ানমারের গৃহযুদ্ধে টাটমাড এখন কড়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে

December 01, 2023 07:19 am | Updated 07:20 am IST

মায়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী থেকে একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে, দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরে আসার মতো একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে টাটমাড (জুন্টা)। তারপর থেকে তারা শক্তি প্রদর্শন করতে থাকলেও এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বর্তমানের সহিংতা এবং জুন্টার পিছু হটার ছবি থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, যুদ্ধটি একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। অক্টোবরের শেষ নাগাদ, থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স (টিবিএ) সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে আক্রমণ শুরু করার পর জুন্টা নিজেদের অনেক ঘাঁটি হারিয়েছে এবং তাদের বাহিনী বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। তাদেরকে এখন বিরোধী পক্ষের উগ্রপন্থীদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশেষত দেশটির গ্রামাঞ্চলে এই ছবি ধরা পড়েছে। ২০১০ সাল থেকেই মায়ানমারে গণতন্ত্রে সেনার হস্তক্ষেপ দেখা যায়। দেশটিতে সেনার আধিপত্য ধীরে ধীরে মজবুত হতে থাকে। দেশের রাজনৈতিক ছবিটাই বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর এনএলডি নেতাদের আটক করার পাশাপাশি, যারাই সেনার বিরোধীতা করছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রবল শক্তি প্রয়োগ করে তাদের কণ্ঠরোধ করা হয়। তবে তাতে হিতে বিপরীত হয়েছে। এনএলডি এবং তাদের জোট সঙ্গীরা নির্বাসনে থাকা অবস্থাতেই ন্যাশনাল ইউনিটি গভার্নমেন্ট (এনইউজি) তৈরি করেছে। এর পাশাপাশি গড়ে উঠেছে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স নামে উগ্রপন্থী বাহিনী। কারেন, কাকচীন, চীন এবং কারেননি এথনিক বাহিনীকে সাথে নিয়ে তারা জুন্টার মোকাবিলা করছে। অন্যদিকে মায়ানমারের ফেডারেল এবং গণতান্ত্রিক চার্টারের জন্য বিরোধীদের তরফ থেকে রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন।

টিবিএর মধ্যে থাকা অন্যান্য গোষ্ঠী — মায়ানমান ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি সহ অন্যরা প্রথমে জুন্টার সাথে তাদের যুদ্ধবিরতি মেনে চলছিল। তবে এখন তারা আবার গৃহযুদ্ধে যোগদান করেছে, উত্তরের শান স্টেটে জুন্টার পায়ের তলার মাটি তারা আলগা করে দিচ্ছে এবং রাখাইন স্টেটে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে থাকা চীন স্টেটের মতো অন্যান্য এনইউজি জোটের জনজাতিগত সশস্ত্র বাহিনীর নতুন করে চালানো যৌথ আক্রমণের ফলে জুন্টা অস্বস্তিতে পড়েছে। আন্তর্জাতিক কমিউনিটির তরফ থেকে মায়ানমারের সামিরক অভ্যুত্থানের নিন্দা করা হলেও সরাসরি এনইউজিকে সমর্থন করা হচ্ছে না। তবে ব্যতিক্রম হিসাবে, ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট এনইউজিকে মায়ানমারের বৈধ সরকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারতের তরফ থেকে গণতান্ত্রিক সংস্কারে সমর্থন প্রদান করা হয়েছে। তবে জুন্টার সাথে অতি সাবধানতার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা হচ্ছে। তার কারণ মায়ানমারে চীনের যে প্রভাব আছে, ভারত তার মোকাবিলা করতে চায়। সম্ভবত এই সমস্ত কারণেই, নয়াদিল্লি চীন স্টেটে সহিংসতার মুখে পড়া জুন্টা সেনাদেরকে মিজোরামে পালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে এবং মোরে সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে নিজেদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থাও করেছে। জুন্টা নৃশংস পন্থা অবলম্বনের বিকল্প বেছে নিয়েছে। প্রতিরোধ ভোঁতা করে দেওয়ার জন্য তারা সিভিলিয়ান টার্গেটে বোমা বর্ষণ করছে। অন্যদিকে, এনইউজির পায়ের তলার মাটি ক্রমশ শক্ত হচ্ছে, তারা আরও বৈধতা পাচ্ছে এবং মায়ানমারে প্রকৃত অর্থে যুক্তরাষ্ট্রীয়, গণতান্ত্রিক কাঠামো ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে। এই পরিস্থিতিতে, জুন্টার সাথে সম্পর্ক নিয়ে নয়াদিল্লিকে পর্যালোচনা করতে হবে।

0 / 0
Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.