অপ্রয়োজনীয় বিচ্যুতি 

গায়ানার সাথে ভেনেজুয়েলার ভুখণ্ড সংক্রান্ত বিরোধ বাড়ানো উচিত নয়

December 05, 2023 11:52 am | Updated 11:52 am IST

বর্তমানে গায়ানার ভুখণ্ডের অংশ, তেল সমৃদ্ধ এলাকা হিসাবে পরিচিত এসেকুইবোর উপর ভেনেজুয়েলা সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করবে কি না, তা নির্ধারণ করার জন্য ভেনেজুয়েলা একটি গণভোটের আয়োজন করেছে। তাই দক্ষিণ আমেরিকার এই দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভেনেজুয়েলার নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৯৫%-এরও বেশি ভোটার দেশটির দাবিকে সমর্থন করছেন। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে কী করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার মাত্র কয়েক মাস আগে এই গণভোট আয়োজনের ফলে একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে এই বামপন্থী নেতা সীমান্তের উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে চান। ভেনেজুয়েলা বরাবর এসেকুইবোর উপর নিজেদের দাবি করে থাকে। তাদের বক্তব্য, এক শতকেরও বেশি আগে, যখন ঔপনিবেশিক শক্তি উত্তর-দক্ষিণে সীমানা নির্ধারণ করছিল, তখন এই অঞ্চলটি চুরি করা হয়। ১৯৬৬ সালে ভেনেজুয়েলা এবং যুক্তরাজ্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য সীমান্ত নিয়ে (গায়ানা আগে একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল) একটি অস্থায়ী জেনিভা চুক্তিতে প্রবেশ করে, যাতে বাস্তববাদী, শান্তিপূর্ণ এবং সবার জন্য সন্তোষজনক একটি সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়। মাদুরোর বামপন্থী পূর্বসূরী হুগো শাভেজ যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন উত্তেজনা হ্রাস পেয়েছিল। তবে তেলের উপর নির্ভর করে যখন গায়ানার অর্থনীতি মজবুত হতে শুরু করে, তখন মাদুরো সরকার অঞ্চলটির উপর নিজেদের দাবি নিয়ে সরব হতে থাকে।

লাতিন আমেরিকার একমাত্র ইংরেজি বলা দেশ গায়ানা বরাবর বলে আসছে যে, আন্তর্জাতিক আরবিট্রেটরদের মধ্যে (ব্রিটেন, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে) হওয়া ১৮৯৯ সালের সীমান্ত সংক্রান্ত চুক্তিটিই চূড়ান্ত এবং তারা ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়ে এই মর্মে একটি রায় প্রদান করার অনুরোধও করেছে। অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার পাল্টা দাবি, তারা ১৮৯৯ সালের চুক্তির অংশ ছিল না, তাই এটিকে তারা অবৈধ বা প্রযোজ্য নয় বলে উল্লেখ করে। গণভোটের উপর নিষেধাজ্ঞার অনুরোধ করে গায়ানা যখন আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়, তখন আদালত এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি। বরং তারা কারাকাসকে বলে যে বর্তমানের স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার জন্য যেন গণভোটের ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়। মাদুরো এসব শুনতে নারাজ। এই বিবাদের উপর আন্তর্জাতিক আদালতের এক্তিয়ার নেই বলে তিনি দাবি করেছেন। স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করার ব্যাপারে তার উপর প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়েছে। পরবর্তী বছরের নির্বাচনের জন্য মাদুরো সরকারের সাথে বিরোধীদের একটি বোঝাপড়া হওয়ার পরে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে ভেনেজুয়েলার উপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা কিছুটা আলগা করা হয়। মাদুরো দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর নিজের কড়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন। অন্যদিকে দেশটির অর্থনীতির বেহাল দশা, অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্রের অভাব এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশের একটা বড় অংশের লোকজন তার উপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। দেশের মধ্যে থাকা এরকম সমস্যাগুলো থেকে নজর ঘোরাতে তাই সীমান্ত সঙ্কট একটি উপায় হতে পারে। নির্বাচনের আগে শাসকদল এটিকে কাজে লাগাতে চায়। তবে এটির মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকার তেল সমৃদ্ধ দেশটির আদৌ কোনো সমাধান হবে না। এত কিছুর মধ্যে যদি সংঘাত বাধে, তাহলে তা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। মাদুরোর তাই একতরফাভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়। বরং তার উচিত জেনিভা চুক্তির প্রকৃত ভাবনা অনুযায়ী, আলোচনার মাধ্যমে গায়ানার সাথে ভুখণ্ড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

0 / 0
Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.