পাঁচ রাজ্যে চলতি বিধানসভা নির্বাচনকে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে চলা সাধারণ নির্বাচনের একটি মহড়া হিসাবে বিচেনা করা হচ্ছে। ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ এবং মিজোরামে ইতিমধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানায় জোরকদমে নির্বাচনী প্রচার চলছে। এই দুই রাজ্যে আগামী ২৫ এবং ৩০ নভেম্বর নির্বাচন হবে। জনসাধারণের মন জয় করার জন্য নানা প্রতিশ্রুতি প্রদান এখনও পর্যন্ত এই সমস্ত রাজ্যের রাজনৈতিক প্রচারের থিম হয়ে উঠেছে। সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির প্রচেষ্টা সেভাবে প্রচার পায়নি। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং কংগ্রেস একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের জনকল্যাণ প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তেলেঙ্গানায় ক্ষমতাসীন ভারত রাষ্ট্র সমিতির উপর ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে কংগ্রেস। সেখানেও রাজ্যের চালু থাকা বিভিন্ন জনকল্যাণ প্রকল্প আরও বাড়ানো হবে বলে কথা দেওয়া হয়েছে। রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস এবং বিজেপি ফের একবার ক্ষমতা দখলের জন্য নতুন নতুন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে। দেশজুড়ে জাতিগত জনগণনার জন্য কংগ্রেসের দাবিতে ভোটারদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিজেপি এই প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারছে না। আগামী ৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফলাফল দেখার পরই সম্ভবত তারা এই ব্যাপারে নিজেদের চিন্তাভাবনা জানাতে পারবে। তবে জানুয়ারি মাসে অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলা রাম মন্দিরের ব্যাপারে দলটি ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে।
উপজাতি সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্কের প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। সুনির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ উপজাতি গোষ্ঠীদের জন্য শেষ মুহূর্তের একটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং সুরক্ষা হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রী মোদী ২৪,০০০ কোটি টাকার পিএম জনজাতি আদিবাসী ন্যায় মহা অভিযান নামের একটি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং মোদী উভয়ের দাবি, তাদের উভয়েই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার ভালো ট্র্যাক রেকর্ড আছে। গবেষণা থেকে যেমনটা দেখা গিয়েছে যে, জনকল্যাণমূলক প্রকল্প থেকে আরও ভারসাম্যযুক্ত উন্নয়নমূলক পরিণাম দেখা যেতে পারে। তবে আরও একটু চিন্তাশীল এবং গবেষণামূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আরও স্বাস্থ্যকর পাবলিক ফিনান্সের বিষয়টি দেখা যাবে। নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য দলগুলোকে আরও বেশি জনপ্রিয় বিষয় খুঁজে পেতে হবে। বিজেপির প্রচার মূলত মোদীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। দলের আঞ্চলিক নেতৃত্ব ততটা গুরুত্ব পায়নি। এছাড়া বিধানসভার আসনের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ পার্লামেন্টের একাধিক সদস্যকে ভোটের ময়দানে নামিয়েছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে কংগ্রেসের প্রচারের মূলে রয়েছেন রাহুল গান্ধী এবং দলের প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে। দলীয় নির্বাচনী প্রচারে আঞ্চলিক নেতৃত্বও গুরুত্ব পেয়েছে, যেমনটা বিজেপির ক্ষেত্রে হয়নি। জোট রাজনীতির সমীকরণ জোর ধাক্কা খেয়েছে। অনেক রাজ্যেই জোটের দলগুলো কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গিয়েছে। এই নির্বাচনগুলোর ফলাফল ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বিরোধীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে, ভোটাররা বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনকে স্পষ্টতই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে থাকেন।