প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে, রোলা গারোঁতে রাফায়েল নাদাল ছাড়া অন্য কোনো চ্যাম্পিয়নের কথা একদম ভাবাই যায়নি। ২০০৫ সালে তিনি যাত্রা শুরু করার পর থেকে, স্পেনের কিংবদন্তী খেলোয়াড় এই ইভেন্টটি ১৪ বার জিতে নিয়েছেন। তার ১১৫টি ম্যাচের মধ্যে তিনি মাত্র তিনটি ম্যাচে পরাজিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে একমাত্র নোভাক জোকোভিচ ঝলসে উঠতেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তাকে নাদালের কাছে হার স্বীকার করতে হতো। এখানে জকোভিচের থেকে নাদাল ৮-২ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। তবে ২০২৩ সালের ফরাসী ওপেন একটি বিরল মুহূর্তের সাক্ষী হতে চলেছে। ২০০৪ সালের পর থেকে এই প্রথমবার ইভেন্টটিতে নাদাল অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তার কোমরে চোট রয়েছে। এই কারণ জানুয়ারি মাস থেকেই তিনি খেলার বাইরে। পুরুষদের টেনিসে সামগ্রিক একটা পরিবর্তন হতে চলেছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। রজার ফেডেরার অবসর নিয়েছেন। জকোভিচকে স্বাভাবিক ছন্দে দেখা যাচ্ছে না। একসময় যে তিনজন বড় খেলোয়াড় টেনিস দুনিয়া শাসন করতেন, তাদেরকে অত্যন্ত দুর্বল মনে হচ্ছে। জকোভিচ দুবারের চ্যাম্পিয়ন। ২২ মেজরে তিনি নাদালের টাই ভাঙার জন্য সচেষ্ট হবেন। তবে বর্তমানে বিশ্ব সেরা এবং বার্সেলোনা ও মাদ্রিদে ফরাসী ওপেন টিউন-আপ ইভেন্টে জয়ী হওয়া কার্লোস আলকারাজ টুর্নামেন্টের মধ্যমণি হয়ে উঠবেন বলে মনে হচ্ছে। ২০ বছর বয়সী এই তারকা ইতোমধ্যে তার স্ল্যাম-জয়ের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন (২০২২ ইউএস ওপেন)। আগামীতে তিনি নিজের এই সুনামকে আরও প্রতিষ্ঠিত করবেন।
তাকে চ্যালেঞ্জ করবেন দুই স্ক্যান্ডিনেভিয়ান খেলোয়াড়, ৪ নম্বরে থাকা ক্যাসপার রুড, যিনি ২০০২ সালের প্রতিযোগিতায় নাদালের বিরুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন এবং ৬ নম্বরে থাকা হোলগার রুনে। এরা দুজনেই সম্প্রতি মন্টে কার্লো এবং রোমে ফাইনালিস্ট হয়েছিলেন। গত সপ্তাহে রোমের সাফল্যের পর ডানিল মেদভেদেব আগের থেকে আরও ধারালো হয়ে উঠেছেন। তবে রাশিয়ান ২ নম্বর খেলোয়াড়টি ওয়াইল্ড কার্ড হিসাবেই সেরা। তার পাশাপাশি রয়েছেন স্টেফানোস সিটসিপাস, আন্দ্রে রুবলেভ, জানিক সিনার এবং আলেক্সান্দ্রা ভেরেভ। মহিলাদের ক্ষেত্রে একটা ভিন্ন ছবি দেখা যাচ্ছে। ইগা সোয়াইটেক, আরিনা সাবালেনকা এবং এলেনা রিবাকিনা শক্তিশালী ত্রয়ী হয়ে উঠেছেন। তারা শেষ চারটি মেজর জিতে নিয়েছেন। স্টুটগার্ট, মাদ্রিদ এবং রোমে রোলা গারোঁর প্রস্তুতি টুর্নামেন্টেও তারা জয়ী হয়েছেন। সোয়াইটেক তার সমকক্ষদের মধ্যে প্রথম সারিতে আছেন। তিনি বিশ্বের ১ নম্বর। প্যারিসে তিনি তিনবার জয়ী হয়েছেন। এছাড়া তিনি তিনবারের মেজর চ্যাম্পিয়ন। তিউনিসিয়ার ওনস জাবেউর ২০২২ সালে ইউএস ওপেন এবং উইম্বলডনে রানার আপ হিসাবে দৌড় শেষ করেছেন। তিনি চোট সারিয়ে ময়দানে ফিরছেন। তবে গত বছর মাদ্রিদে এবং এপ্রিলের প্রথম দিকে চার্লেস্টনে তার জয় প্রমাণ করে যে, তিনি জয়ী হওয়ার অন্যতম দাবিদার। একই কথা বলতে হয় চেক রিপাবলিকের বারবোরা ক্রেজসিকোভার ব্যাপারে। তিনি ২০২১-এর সিঙ্গলস এবং ডাবলসের চ্যাম্পিয়ন। এই সব কিছু থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট, এবারের টুর্নামেন্টে কোনো ফেভারিট নেই, অপ্রত্যাশিতভাবে জয়ী হতে পারেন, এমন কেউও নেই।