ADVERTISEMENT

প্রবল প্রতিহিংসা

Published - October 13, 2023 11:18 am IST

অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের পুরানো মামলা জাগিয়ে তোলা অসহিষ্ণুতা প্রমাণ করে

লেখক, সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায় এবং কাশ্মীরের একজন শিক্ষাবিদের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের একটি অপরাধমূলক মামলা ফের জাগিয়ে তোলার পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০১০ সালের ২১ অক্টোবরের ঘটনা। সেদিন নয়াদিল্লিতে অরুন্ধতী রায় এবং কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক শেখ শওকত হোসেন জাতীয় ঐক্যের বিরুদ্ধে এবং বিভাজনমূলক বক্তব্য পেশ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই পুরানো মামলাতেই এবার তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি আরোপ করার অনুমোদন দিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি.কে. সাক্সেনা। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন এবং পিনাল কোডের অন্যান্য সংস্থান অধীনে নিউজক্লিকের প্রধান সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থের সাম্প্রতিক গ্রেফতারির পর এই পদক্ষেপ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নাগরিক সমাজের শত্রু বলে ধরে নেওয়া এবং সরকারের কড়া সমালোচক হিসাবে পরিচিত এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের পুরানো মামলা জাগিয়ে তোলার পিছনে প্রতিহিংসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অসহিষ্ণুতাও ফুটে উঠেছে। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, অরুন্ধতী এবং শওকতের বক্তব্যকে দেশদ্রোহের সমতুল বলে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পেশ করা একটি অভিযোগে দাবি করা হলেও ওই বক্তব্য পেশের ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ মনে করেছিল, বিষয়টি দেশদ্রোহের অপরাধ হতে পারে না। তবে ২০১০ সালে ২৭ নভেম্বর পুলিশের মতামতকে খারিজ করে দেন এক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি পুলিশকে এফআইআর দাখিল করার নির্দেশও দেন। পুলিশ সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। দেশদ্রোহ, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতার প্রচার করা, জাতীয় অখণ্ডতা বিরোধী বক্তব্য এবং আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন বিবৃতি সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া এফআইআরে অনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট (ইউএপিএ)-এর ধারাও প্রয়োগ করা হয়এছে। “বেআইনি কার্যকলাপের” বিরুদ্ধে শাস্তি দিতে এই আইনের ধারা ব্যবহার করা হয়।

‘আজাদি: একমাত্র পথ’ শীর্ষক সম্মেলনে যে বক্তব্য পেশ করা হয়েছিল, বর্তমানের সরকার তা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা চালিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেনি। তার কারণ এই পদক্ষেপ নিলে, তিনজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার যে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তা ঝুঁকি মুখে পড়তে পারে। প্রসঙ্গত, সেই ঘটনার পর কাশ্মীরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচিত আইনের শাসন, জম্ম-কাশ্মীরের বিশেষ স্ট্যাটাস বাতিল এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগাভাগি করা। এই অবস্থায় অতীতের কোনো রাজনৈতিক বক্তব্যকে হাতিয়ার করে কাউকে অপরাধী প্রমাণ করার কোনো মানে হয় না। দেশদ্রোহ বাদ দিয়ে বাকি অপরাধের জন্য সাক্সেনা শাস্তি প্রদান করার অনুমদোন দিয়েছেন। দেশদ্রোহের অভিযোগ উত্থাপন করার ব্যাপারে বর্তমানে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের একটি বাধা রয়েছে। তবে পুলিশ ইউএপিএ আইনের ধারা প্রয়োগ করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। আইনটির ৪৫ সেকশন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং এটি সংগ্রহ করার জন্য কঠোর বিধি-নিষেধের কথা উল্লেখ করা রয়েছে। এটা অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার যে প্রসিকিউশন কোনো বিধি-নিষেধে আবদ্ধ কি না। ক্রিমিনাল প্রসিজার কোডের অধীনে, অপরাধের জন্য বিধি-নিষেধের ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সেকশন ১৫৩এ, ১৫৩বি এবং ৫০৫ - এগুলোর জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বিধি-নিষেধের হিসাব করার সময় যখন নিষেধাজ্ঞা জন্য অপেক্ষা করা হয়, কোডে সেই সময়সীমাকে বাদ দেওয়ার অনুমতি রয়েছে। তবে বিধি-নিষেধের সময়সীমার পরে যদি নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়ে থাকে, তাহলে আদালত যে অনুরূপ ছাড় প্রদান করবে, তার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ।

This is a Premium article available exclusively to our subscribers. To read 250+ such premium articles every month
You have exhausted your free article limit.
Please support quality journalism.
You have exhausted your free article limit.
Please support quality journalism.
The Hindu operates by its editorial values to provide you quality journalism.
This is your last free article.

ADVERTISEMENT

ADVERTISEMENT