উষ্ণতার চোখ রাঙানি

ভারতকে অবশ্যই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য পরিকাঠামো গড়তে বিনিয়োগ করতে হবে

May 19, 2023 04:57 pm | Updated 04:57 pm IST

ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লুএমও) পরবর্তী দশকের তাপমাত্রা সংক্রান্ত ট্রেন্ড নিয়ে নিজেদের অনুমানের বার্ষিক আপডেট জানিয়ে দিয়েছে। প্রত্যাশিতভাবেই, যে পূর্বাভাস তারা দিয়েছে, তা বেশ উদ্বেগজনক। আপডেট থেকে জানা গিয়েছে, ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে প্রত্যেকটি বছর বার্ষিক অতিরিক্ত গ্লোবাল সার্ফেসের কাছাকাছি তাপমাত্র ১৮৫০-১৯০০-এর গড়ের চেয়ে ১.১°-১.৮°C বেশি হবে। ৬৬% সম্ভাবনা রয়েছে যে গ্লোবাল সার্ফেস নিকটস্থ তাপমাত্র প্রাক-শিল্প যুগের ১.৫°C অতিক্রম করবে, ২০২৭ সালের আগে কমপক্ষে একটি বছরে এমনটা হবে। তবে পাঁচ বছরের তাপমাত্রার এই থ্রেশহোল্ড অতিক্রম করার সম্ভাবনা কম। ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বার বার বলেছে যে ১.৫°C থ্রেশহোল্ডটি অতিক্রম না করাটাই ভালো। কারণ এটি অতিক্রম করলে বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে বিধ্বংসী প্রভাব দেখা যাবে। জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতারা এই বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে আবার এই রুবিকনের মধ্যে তাপমাত্রাকে সীমাবদ্ধ রাখতে সক্ষমও হয়েছে। তবুও বর্তমান জলবায়ু সংক্রান্ত পরিস্থিতি থেকে আগাম অনুমান করা হচ্ছে যে, এই শতকের শেষে বিশ্বের তাপমাত্রার পরিমাণ 2°C-এর বেশি বাড়বে।

ডব্লুএমও বলছে, ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে কমপক্ষে একটি বছরের তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি হবে — ২০১৬-তে রিপোর্ট করা অনুযায়ী তা ১৪.৮৪°C ছাড়িয়ে যাবে (২০১৫ সালের রেকর্ডের চেয়ে এটি ০.০৭°C আরও বেশি উষ্ণ হয়ে উঠেছিল)। গত পাঁচ বছরের (২০১৮-২০২২) তুলনায় আগামী পাঁচ বছরে (২০২৩-২০২৭) তাপমাত্রা আরও বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। সমুদ্রেও আগুন জ্বলছে। ২০২৩-২৪-এর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এল নিনো-সাউদার্ন অসিলেশন (ENSO) পজিটিভ হতে পারে, যার মানে সেন্ট্রাল ইকুয়াটোরিয়াল প্রশান্ত মহাসাগর কমপক্ষে অর্ধেক ডিগ্রি হবে, অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রির বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বর্ষার সময় ভারত এই এল নিনোর আশঙ্কায় থাকে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর ইতোমধ্যে পূর্বাভাস দিয়ে দিয়েছে যে এবারের বর্ষার বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে। ডব্লুএমওর সেক্রেটারি জেনারেল পেট্টেরি টালাস আপডেটের প্রসঙ্গে এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছেন, মানুষের নানা কার্যাবলীর কারণে হওয়ার জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে এল নিনোর সংমিশ্রণে বিশ্বের তাপমাত্র অভাবনীয় স্তরে পৌঁছাবে। সমুদ্রের তাপমাত্রা যত বাড়বে, তত বেশি শক্তিশালী সাইক্লোন তৈরি হবে। এই সপ্তাহে মায়ানমার চিরে যাওয়া সাইক্লোন মোচার কারণে কমপক্ষে ৬০টি প্রাণ গিয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রথমে এই সাইক্লোনটি যতটা শক্তিশালী হবে বলে অনুমান করা হয়েছিল, বাস্তাবে দেখা গেল তার দাপট অনেক বেশি। ডব্লুএমও আপডেটের মধ্যে ভারতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ইনপুট নেই। তবে সামগ্রিক ট্রেন্ড থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে বর্ষার বৃষ্টিতে পুষ্ট কৃষি নির্ভরশীল ও বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূল থাকা দেশ ভারত বিশ্ব জলবায়ুতে পরিবর্তনের ফলে অনেক প্রবল সমস্যার মুখোমুখি হবে। সাইক্লোন এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত দুর্যোগের ব্যাপারে ভারতের পূর্বাভাস দেওয়ার দক্ষতা আগের থেকে উন্নত হয়েছে। তবে এগুলোর মোকাবিলা করা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। এই পরিস্থিতিতে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে তৎপরতার সাথে বিনিয়োগ করতে হবে।

Top News Today

Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.